মিশন অফ এ গ্যাংস্টার || ব্লাক স্যাডো- ৩য় এবং শেষ পর্ব

|| ব্লাক স্যাডো ||শেষ পর্ব
Writter: আবুকাহার ইসলাম



হাসপাতালে সবাই মোটামুটি সুস্থ।
শুধু আকাশের জীবন বিপর্যয়ে।দেহে আঘাত করা তিনটা গুলি যথেষ্ট ড্যামেজ করেছে।
অবস্থা দেখে ডাক্তার সরাসরি জানিয়ে দিয়েছে বেঁচেথাকার সুযোগ ৪০%।
অবশ্য কাহারেরএই নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই।মৃত্যুর সাথে খেলতে গেলে সবসময় বিজয় লাভ সম্ভব নয়।মাঝেমধ্যে কলিজার কিছু অংশ বিসর্জন দিতে হয়।তাছাড়া সে এযাত্রায় বেঁচে গেলেও ক্যান্সার নামক ভয়ংকর ব্যধি খুব শিঘ্রই তাকে ওপারে নিয়ে যাবে।"

বাক্যগুলো সুইফ ল্যাপটপে টাইপ করে আকাশের মাথায় আলতো ভাবে হাত রাখলো।
- এখন কেমন লাগছে দোস্ত?
- নো ফিলিংস।
- সিগারেট খাবি?
- শালা আমি অসুস্থ।এই অবস্থায় সিগারেট খেলে যাও বাঁচার চান্স আছে তাও থাকবে না।
- জানি,এর জন্য বলে তোর প্যারা বাড়িয়ে দিলাম।এখন তুই সিগারেট খাওয়ার প্যারায় বেঁচে থাকবি।
- হারামি।একটা কথা বলবো?
- বল।
- গ্যাংয়ে ঘটে আসা সম্পূর্ণ গল্প তো আমরা দুজনে লিখে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছি।আমি মরে গেলেও কি গল্প গুলো লেখা চলতে থাকবে?
- জানিনা।
- আমাদের দুজনের কারণে আজ ব্লাক স্যাডো এই অবস্থানে।তাই আমার অবর্তমানে কার্যক্রম স্থগিত রাখিস না।
- চুপ,একদম চুপ।তুই বেঁচে থাকবি।আমরা একসাথে ব্লাক স্যাডো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিবো।আপাতত ঘুমা।কাল হাসপাতাল থেকে নাম কাটিয়ে ক্যাম্পে যাবি।রেড ওয়াইন আছে দুই বোতল। পাপন অর্ডার করে আনাইছে।
- আমাকে ছাড়া কিন্তু বোতল খুলবি না।
- ওকে।থাক তাহলে,আসি।

আকাশ ছলছল চোখে সুইফ দিকে তাকিয়ে রইলো।ছেলেটা থাকলে হয়তো বোরিং সময়গুলো পাড় হতো।ভাগ্যক্রমে,ডাক্ত­ারের কড়া নির্দেশ।বেশিক্ষণ রোগির সাথে কথা বলা যাবে না।

কিছু বন্ধুত্ব বলে দেয়,আমি সার্থক তোর মতন বন্ধু পেয়ে।
পুরো বাড়ি ফুল দিয়ে সাজানো।
গোলাপের তীব্র সুভাষ নাকে ভেসে আসছে।
কাহার বুঝে উঠতে পারছে না,ঘটনা আসলে কি?
তাই সে ব্যাপারটা বুঝতে জোরে ডাক দিলো মিম এই !কোথায় তুমি?"
তার কিছুক্ষণ বাদে কেউ একজন কাহারের পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে।
- হঠাৎ এত প্রেম?
- এমনি।
- উঁহু,কারণ তো কিছু একটা আছে।
- জ্বি না।কোনো কারণ নেই।
- আজ আমাদের ম্যারিজডে?
- উঁহু।
- তোমার বার্থডে?
- না।
- আমার বার্থডে?
- না।
- এই দিনে তোমার সাথে প্রথম দেখা হয়েছিলো?
- নারে বাবা।
- তাহলে কি?
- লজ্জা লাগে।
- বলো।
- আমি।
- তুমি!
- আম্মু।
- সত্যি?
- জ্বি।
- জাস্ট দুই মিনিট ওয়েট।
- কেন?
- আসতেছি।

এই বলে কাহার রুমে গিয়ে দরজা আটকে নিলো।
তারপর আলনা থেকে লুঙ্গি নিয়ে,সেটা ধারণ করে উড়াধুড়া ড্যান্স।
জানালা থেকে মিম এমন অবস্থা দেখে হাসিতে কুপোকাত।
জোসেফ সকাল সকাল হাসপাতালে প্রবেশ করে হতভম্ব।
পুরো হাসপাতাল জুড়ে আতংক।
ডাক্তাররা সব থরথরিয়ে কাঁপছে।এমন অবস্থা দেখে জাহিদ এক ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞাসা করলো;
- কি হয়েছে ভাই?
- আইসিইউতে থাকা পেসেন্ট নেই।
- মানে?
- ব্লাক স্যাডো গ্যাংয়ের এক ভদ্রলোক আইসিইউতে ছিলো।তাকে এখন খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
- কি বলছেন আপনি?
- জ্বি।
- কোথায় যেতে পারে?বা শেষ কোন অবস্থায় দেখেছেন।এনি ক্লু?
- না,বাট সবুজ মাস্ক পড়া দুজন ব্যক্তিকে আইসিইউ এর আশেপাশে ঘুরাঘুরি করতে দেখেছি।
- লাল রঙের ব্যসলেট ছিলো দুজনের হাতে?
- হ্যা।আর পায়ে সাদা রঙের বুট।
- ওহ্ গড।তাহলে কালার্স গ্যাংয়ের কাজ।কিন্তু ওরা এটা করতে যাবে কেন?
- আমরা কিভাবে জানবো স্যার?
- সেটাও ঠিক।আচ্ছা আপনারা নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।আমি ব্লাক স্যাডোর লোক।দেখছি কি করা যায়।

এটা বলে জোসেফ কাহারের নাম্বারে কল করলো।
- হ্যালো বস্।
- হুম।
- কালার্স গ্যাংয়ের সাথে আপনার কোনো শত্রুতা আছে?
- না।ওদের সাথে কিসের শত্রুতা থাকবে?
- তাহলে ওরা আকাশ কিডন্যাপ করলো যে।
- হোয়াট?ওদের লিডার কে?
- তোফিক
- তুই গাড়ি নিয়ে ওদের ক্যাম্পের সামনে যা আমি আসতেছি।

জোসেফ কল কেটে তারাহুরো করে বেড় হলো।
চোখে ভেসে ওঠা তীব্র ক্ষোভ বুঝিয়ে দেয়,আজ সে একা যথেষ্ট।
কাহার গাড়ি নিয়ে কালার্স গ্যাংয়ের ক্যাম্পের সামনে থামা মাত্র জোসেফ ক্যাম্পের ভেতর পর পর তিনটা বোম ছুড়ে মারলো।
তারপর মেশিনগান বের করে উড়াধুড়া গুলি।কাহার অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।বালক মানুষ মারছে না পাখি?
অপরদিকে ভেতরে হুরস্থর শুরু হয়ে গেছে।কেউ ক্যাম্প থেকে পজিশন নেওয়ার সময় পাচ্ছে না।
ভাগ্যক্রমে একপর্যায়ে জোসেফ কাছে থাকা ম্যাগাজিন ফুরিয়ে গেলো।
তখন জোসেফ গাড়ি থেকে লাঞ্চার বের করে কাহারের কাছে এগিয়ে এসে বললো বস্,পিছে ব্যাক-আপ দিয়ে ধরেন।তিনটা বুলেট আছে।শালার বিল্ডিং আজ ধূলিসাৎ করে দিবো।
কাহার জবাব না দিয়ে পেছনে ধরলো।সামনে থেকে জোসেফ লাঞ্চার বুলেট সেট করে পাঁচ মিনিটে ধাই ধাই তিনটা ফায়ার।
মুহূর্তে বিল্ডিং পুরো ভেঙে গুড়িয়ে গেছে।
এর কিছুক্ষণ বাদে হাত উঁচু করে কয়েকজন বের হয়ে এলো।
কাহার জোসেফের কাঁধে হাত রেখে বললো "এবার থাম।
জোসেফ হাফ ছেড়ে জবাব দিলো "ওকে বস্।
ঠিক তখন অস্ত্র সেট করা দশটা গাড়ি এসে উপস্থিত হলো।
গাড়ির ভেতর থেকে নেমে এলো আকাশ,সুইফ সেফুল সহ আরো কয়েকজন।
- কি হইছে বস্?শুনলাম এখানে হামলা করছেন?অর্ডার দেন,ধুলাবালি গুলাও গায়েব করে ফেলি(আকাশ)
- তুই এখানে?[বিস্মিত চোখে](জোসেফ)
- তাহলে কোথায় থাকবো?(আকাশ)
- আমারও তো একই কথা।কোথায় থাকবি?(জোসেফ)
- তোরা চুপ কর।জাহিদ,তুই কি দেখালি এটা?(কাহার)
- সরি বস্।আকাশ কিডন্যাপ করেছে শুনে কন্ট্রোল করতে পারিনি।শালাদের সাহস কত।আমার অসুস্থ বন্ধুকে কিডন্যাপ করতে চায়।(জোসেফ)
- তুই যা করলি তাতে আকাশ কিডন্যাপ হলে এতক্ষণে বিল্ডিং চাপা পড়ে মারা যেনো।(কাহার)
- ওহ্ হো,তাইতো।আমি ভুলেই গেছিলাম(জোসেফ)

এর মধ্যে তোফিক এগিয়ে এসে করুণ দৃষ্টিতে জোসেফ দিকে তাকিয়ে বললো;
- অসহায়ের ওপর এরকম অত্যাচারের মানে কি ভাই?(তোফিক)
- মিস্টেক হয়ে গেছে।যা ক্যাম্পে যা।(জোসেফ)
- ক্যাম্প আর আছে কোথায়?সব না ইট আর বালি।তাছাড়া ভাগ্যিস মিস্টেক ছিলো,সিরিয়াস হলে তো এতক্ষণে এখানে পদ্মা নদীর নতুন শাখা তৈরি করে ফেলতেন।(তোফিক)
- আচ্ছা বাদ দে।জয়েন করবি?(আকাশ)
- কোথায়?(তোফিক)
- ব্লাক স্যাডোতে?(আকাশ)
- এটা তো আমার সৌভাগ্য হবে।(তোফিক)
তবে সব কথা এক কথা তাদের মাঝে বিশুদ্ধ ভালবাসা বিদ্যামান
==>সমাপ্ত<==
মিশন অফ এ গ্যাংস্টার || ব্লাক স্যাডো- ৩য় এবং শেষ পর্ব মিশন অফ এ গ্যাংস্টার || ব্লাক স্যাডো- ৩য় এবং শেষ পর্ব Reviewed by Surgey Brin on March 11, 2019 Rating: 5

No comments:

Dangerous Force 2012-19
Powered by Blogger.