মিশন অফ এ গ্যাং স্টার || ব্লাক স্যাডো-পর্ব ২

||- ব্ল্যাক স্যাডো || ২য় পর্ব
Writter =আবুকাহার ইসলাম

এটা কোনো ভুল হলো!চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ো।
তোমায় জড়িয়ে না ধরলে ঘুম আসে না।
-সাত দিন জড়িয়ে ধরতে পারবা না।
-ওরে বাবা।বাঁচবো কিভাবে?
- বাঁচবা কিভাবে মানে?
- বুঝবা না।আচ্ছা ক্ষমা করে দেওয়া যায় না?
- না।
- প্লিজ।
- না।
- শেষবার ক্ষমা করে দাও।
- না।
- তুমি যা বলবা আমি তাই করবো।প্লিজ সরি।
- যা বলবো করবা?
- হুম।
- গোসল করে আসো।
- এ..এই শীতে!
- হ্যা,আমি যা বলবো তুমি তো তাই করবা।
- অন্য যে কোনো শাস্তি দেও প্লিজ।এটা একটু ইয়ে হয়ে যায়।
- না।
- গোসল করতেই হবে?
- এই মুহূর্তে।
- পানি গরম করে দিবা?
- ঠান্ডা পানি দিয়ে করতে হবে।
- যদি জমে যাই?
- জমলে জমবা।

কাহার বুঝতে পারলো বউয়ের রাগ ভাঙানোর দ্বিতীয় কোন উপায় নেই।তাই সে খাট থেমে নেমে গোসল খানার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো।
ঠিক তখন পেছন থেকে মিমের ডাক "এই দাঁড়াও।এত পাগল কেন তুমি?"
কাহার ভ্রু কুচকে জিজ্ঞাসা করলাম "আবার কি করলাম?"
- গোসল করতেহ হবে না।চুপচাপ পাশে এসে শক্ত করে জড়ি ধরো।জানোনা,তুমি জড়িয়ে ধরে ঘারের কাছে মুখ না রাখলে আমার ঘুম আসে না।

কাহার কথা না বাড়িয়ে লাফ দিয়ে খাটে উঠে মিমকে কে জড়িয়ে ধরলো।
মিম মনে মনে হাসছে।
প্রিয় মানুষটা একটু আধটু পাগল না হলে নয়।
(৪)
নদীর আছড়ে পড়া স্রোতের শব্দে সুইফ জেগে গেলো।জেগে গিয়ে কিছুটা বিরক্তি বোধ হচ্ছে।
সময় অনুযায়ী আরো তিন ঘণ্টা ঘুম বাকি আছে তাঁর।
এরমধ্যে আবার অপরিচিত গলার আওয়াজ ভেসে এলো।ভাববার বিষয়!
চারিপাশে কেমন গা ঝুমঝুমে অবস্থা।মন বলছে কিছু একটা চলছে।
ব্যাপারটা আর প্রশ্রয় না দিয়ে সাথে সাথে টর্চ হাতে বের হলো সুইফ।
বাহিরে এখনো ঘন অন্ধকার।তবে দূরে গাছের আড়ালে আলো দেখা যাচ্ছে।এরপর আচমকা লেজারের তীক্ষ্ণ লাল আলো সুইফের বুকে এসে পড়লো।পরক্ষণে রায়হান দেরী না করে কোমর থেকে পিস্তল বের করে লেজার বরাবর শুট করলো।
এটা টার্গেট বাই টার্গেট স্টেপ নামে পরিচিত।খুব কম লোকের জানা আছে এই পরিস্থিতিতে শুট করার নিয়ম।

সুইফের গুলির শব্দে ক্যাম্পে সবার ঘুম ভেঙে গেলো।সবাই বের হয়ে পড়লো অস্ত্র হাতে।
ভাগ্যক্রমে বাহির সম্পূর্ণ স্তব্ধ নীরব।দূরে আলোটাও নিভে গেছে।
এখন ভোর হওয়া আগ পর্যন্ত কিছু বোঝা মুশকিল।
এর মাঝে আকাশ সুইফের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলো "গুলির শব্দ পেলাম?"
সুইফ জবাবে বললো "কিছু একটা ঘটতে চলেছে।"
- ক্লিয়ার করে বলেন তো।
- ক্লিয়ার করে বলার কিছু নেই।ঘোর বিপদ অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।আর হ্যা,নাইট গার্ড যারা ছিলো তাঁরা সম্ভবত সব শেষ।জংগল গার্ড,ওভার ওয়ে গার্ড,ক্যাম্প গার্ড দিয়ে প্রায় ২০০ জন মারা গেছে।
- আপনি জানলেন কিভাবে?
- দূরে জংগলের যে অংশ দেখছেন সেখানে কিছুক্ষণ আগে আলো জ্বলছিলো।তাছাড়া সেখান থেকে লেজার এসে পড়েছে আমার বুকে।এবং ক্যাম্পের আশেপাশে কয়েকজনের ফিসফিস কথার আওয়াজও পেয়েছি।কথা গুলো বুঝতে পারিনি তবে ২০০ জন যে মারা গেছে এটা স্পষ্ট শুনেছি।এসব মিলিয়ে এটা প্রমাণ করে,ব্লাক স্যাডো আজ অন্যকারো টার্গেটে।
- অন্যকারো টার্গেট সেই প্রথম থেকে হয়ে আসছে।জানিনা কবে শেষ হবে এই টার্গেট টার্গেট খেলা।শালার,এক দল শেষ করি তো অন্যদল এসে বলে আমার বাপের দলরে কেন মারলি।ঠেলায় পড়ে সে দলরেও শেষ করি তো আরো এক দল এসে বলে ওটা আমার কাকার দল ছিলো।ব্যস এবার তারেও শেষ করতে হয়।তখন আবার আমাদের মাঝে একজন শত্রু হয়ে আমাদেরই ওপর হামলা করে।ওহ্ গড।আর কত?

কথা শেষ করে আকাশ নিচে তাকালো।ঠিক তখন সাইলেন্সার ব্যবহার করা পিস্তলের হালকা শব্দ।গুলি এসে লেগেছে আকাশের বুকে।
সুইফ অবাক।
আকাশ সাথে সাথে আছড়ে পড়লো মাটির বুকে।
তারপর আরো একটা শব্দ।এবার টার্গেট ছিলো সুইফ

কি হচ্ছে কিচ্ছু বোঝা মুশকিল।
তবে কাহারের কানে খবর চলে গেছে।
অপরদিকে ভোরের আলো হালকা উঁকি মেরেছে।
ভেতর থেকে ভেসে আসছে আটো শুটারের শব্দ।
আকাশ জানে এতে কোনো লাভ হবে না।কারণ হামলাকারীরা যথেষ্ট নিয়ম জেনে মাঠে নেমেছে।
(৫)
এখন সকাল দশটা।
কাহার প্রতিদিন ন্যায় আজও এই সময়ে গেট দিয়ে প্রবেশ করছে।
তবে ফুরফুরা মনে নয়।
ভেতরে এক হ্রাস বিষন্নতা।
ক্যাম্পে কি হয়েছে না হয়েছে সব জানা আছে তাঁর।তবু হাত বাঁধা ছিলো।চাইলেও আসতে পারছিলোনা সে।
বউকে দেওয়া কথা অমান্য করলে যে ঘোর বিপদ।
বুকের ভেতরটা চুপিসারে জিজ্ঞাসা করছে "মাঝে মাঝে কিছু অনিয়ম হলে কি খুব বেশি বিপদে পড়তে হয়?"
উত্তর কাহারের কাছে নেই।
কিন্তু এর মাধ্যে আরো একটা প্রশ্ন ছুড়ে মারলো হিমু।
"এই পথে আসার গল্পটা বলবেন ভাই?"
কাহার মাথা উঁচু করে হিমুর দিকে তাকালো।
গোলগাল চশমা পড়া কিউট একটা লোক।বয়স বোঝা মুশকিল।তবে ৩০-৪০ হবে হয়তো।
উচা-লম্বা,সু-স্বাস্থ­বান।এই লোককে দেখে চোখ বন্ধ করে যে কোন নারী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে রাজি হবে।
অপরদিকে হিমু জবাব না পেয়ে করুনা সমেত বললো "আমি আপনার ফ্যান।অনেক বড় ফ্যান।একপ্রকার পাগল ফ্যানও বলতে পারেন।ডাবল-ত্রিপল নামে আমার একটা গ্যাং আছে।যেটা সম্পূর্ণ আপনার স্টাইলে পরিচালনা করি।এক বইয়ে আপনার গ্যাং সম্পর্কে প্রথম গল্প পড়ে মাথায় আপনার মতন হওয়ার স্বপ্ন চেপে বসে।বইয়ের লেখক সম্ভবত আপনারই ছোটো দুই ভাই আকাশ ও সুইফ ।এরপর থেকে গল্প পড়ে পড়ে কিভাবে আপনার মতন হওয়া যার এর সম্পূর্ণ ধারণা নেই।ঠিক তার কিছুদিন পর আপনার জীবন কাহিনী পড়ার ইচ্ছা জাগে।ইচ্ছা অনুযায়ী বই কিনে আনি।কিন্তু পড়ার চেয়ে আপনার মুখে শোনা বেশি ইন্টারেস্টিং লাগবে।এটা ভেবে,পরে এই ছোট্ট আয়োজন।"

কাহার অবাক দৃষ্টিতে আরো একবার হিমুর দিকে তাকালো।তারপর পকেট থেকে 9mm বের করে ধাই ধাই পাঁচটা শুট।
শুটে মাথা থেকে শুরু করে পেট পর্যন্ত মেন পয়েন্ট গুলো উড়ে গেছে।
নিমেষে চারিপাশ শূন্য।দাঁড়িয়ে আছে কাহার একা।আকাশ,সুইফ রায়হান,নিয়ামত,জাহিদ,­ সহ শত শত দেহ মাটিতে পড়ে আছে।
দেহ গুলো পড়ে থাকার ধরণ দেখে বোঝা যাচ্ছে কারো থেকে কেউ কম ছিলো না।হিমু সত্যি অদ্ভুত একটা গ্যাং তৈরি করতে সফল হয়েছিলো।
যেখানে ব্লাক স্যাডো এবং ডাবল ত্রিপল সমান সমীকরণে মাপা চলে।
দুই দলের লোক সমান গুলিতে গুলি বিদ্ধ হয়েছে।
পার্থক্য শুধু,একদল আহত এবং একদল নিহত।
তবে আহত ও নিহতর মাত্রা এটা প্রমাণ করে "হিমু গল্প শুনতেই এখানে এসেছিলো।কাউকে আঘাত করা তাঁর ইচ্ছা ছিলো না।
To be con.......
মিশন অফ এ গ্যাং স্টার || ব্লাক স্যাডো-পর্ব ২ মিশন অফ এ গ্যাং স্টার || ব্লাক স্যাডো-পর্ব ২ Reviewed by Surgey Brin on March 10, 2019 Rating: 5

No comments:

Dangerous Force 2012-19
Powered by Blogger.